শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ১১:৪৯ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক॥
ফরিদপুরের মধুখালীতে চাঞ্চল্যকর শাহ মো. রাজন (২৮) হত্যা মামলায় কুখ্যাত সন্ত্রাসী এবং একাধিক হত্যা মামলার আসামি মির্জা মাজহারুল ইসলাম মিলনসহ পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, অন্য একটি ধারায় তাদের সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ, ২য় আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির মধ্যে চারজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মধুখালী উপজেলার মো. আরমান হোসেন, মির্জা মাজহারুল ইসলাম মিলন, মো. মামুন শেখ, মো. আছাদ শেখ (পলাতক) ও মো. ইলিয়াছ মৃধা। আসামিদের মধ্যে মো. আছাদ শেখ পলাতক থাকায় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
ঘটনার বিবরণ:
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ বিকেলে শাহ মো. রাজন মধুখালীর নিজ বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন। ওইদিন বিকেলে আসামিরা তার ব্যবহৃত পালসার মোটরসাইকেলটি মধুমতি নদীতে ফেলে দেয়। এরপর কুড়ানিয়ার চর এলাকার সিদ্দিক মাস্টারের বাগানে নিয়ে কুখ্যাত সন্ত্রাসী মির্জা মাজহারুল ইসলাম মিলনের নির্দেশে আছাদ মোল্যা ও মামুন শেখসহ অজ্ঞাত ৫-৬ জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে রাজনকে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ ওই বাগানের ভেতরের পুকুরের পূর্ব পাড়ের চালায় মাটির নিচে চাপা দেওয়া হয়।
তদন্ত ও রায়:
আসামি আরমানকে গ্রেফতারের পর তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ২০১৪ সালের ২ এপ্রিল সকালে থানা পুলিশ তার দেখানো মতে ঘটনাস্থল থেকে রাজনের মরদেহ উত্তোলন করে। পরদিন ৩ এপ্রিল রাজনের মা জোসনা বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রকিবুল ইসলাম বিশ্বাস জানান, সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে শাহ মো. রাজন হত্যায় জড়িত পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
পরিবারের প্রতিক্রিয়া:
এদিকে, রাজনের পরিবার আদালতের এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। রাজনের স্বজনরা দাবি করেছেন, তারা মির্জা মিলনসহ সকল দোষীর ফাঁসি চান এবং উচ্চ আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে ফাঁসির জন্য আবেদন করবেন।